সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন

করোনার টিকা : প্রথম ডোজ বন্ধ, দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনিশ্চয়তা

করোনার টিকা : প্রথম ডোজ বন্ধ, দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনিশ্চয়তা

স্বদেশ ডেস্ক:

একটি ব্যাংকে কাজ করেন রুম্পা জাহান। প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার জন্য তিনি নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু সরকারের প্রথম ডোজ টিকা সংক্রান্ত যে সিদ্ধান্ত এসেছে সেটাতে তিনি হতাশ। রুম্পা জাহান বলছেন, যেহেতু তাকে প্রতিদিন কাজে বের হতেই হয় – তাই টিকা নেয়াটা তার খুব দরকার।

তিনি বলছেন, ‘অফিস-আদালত বন্ধ হলেও ব্যাংক খোলা। আমাকে বাইরে বের হতেই হবে, কাজে আসতেই হবে। তাই টিকা নিতে চেয়েছিলাম। এখন আমি খুবই হতাশ। এই মহামারীর সময় একমাত্র ভরসা ছিল টিকা। সেটা যদি দিতে না পারি তাহলে সাবধান থাকার পরেও সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।’

রুম্পা জাহানের মতো অনেকেই নিবন্ধন করেছেন আবার অনেকে প্রথম ডোজ টিকা নিয়ে অপেক্ষা করছেন দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার।

প্রথম ডোজ সরকার আপাতত বন্ধ করেছে, আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।

করোনাভাইরাসের এই টিকা ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে সরকার চুক্তির মাধ্যমে নিয়ে আসছে।

সরকারের কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির প্রধান ড. শহীদুল্লাহ বলছিলেন, সিরাম ইন্সটিউটের সাথে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৩ কোটি টিকার যে চালান পাওয়ার কথা ছিল সেটা পাওয়া যাচ্ছে না।

তাই সরকারের কাছে যেটা মজুদ আছে তা দিয়েই দুই ডোজের কাজ যাতে চালানো যায় সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত পেয়েছি এক কোটি দুই লাখ। সেটার উপর নির্ভর করে সরকার অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে টিকা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। প্রথম ডোজের সাথে দ্বিতীয় ডোজ চলছিল। এখন যারা প্রথম ডোজ যারা নিয়েছে তাদের দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।’

‘এই অনিশ্চয়তার মাঝখানে সরকার এখন ভাবছে কি পরিমাণ টিকা আছে। কারণ ২৭ লাখ লোক ইতিমধ্যে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছে। বাকি যারা আছে তাদের দিতে গেলে আনুমানিক ১২ লাখ ডোজ ঘাটতি হবে,’ বলছিলেন তিনি।

এদিকে দেশের কাছে যে পরিমাণ টিকা আছে সেটা দিয়ে মধ্য মে মাস মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়া যাবে।

রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ২০ লাখ টিকা পাওয়া যাবে।

সেটা পাওয়া গেলে প্রথম ডোজ যারা নিয়েছেন তারা সবাই দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে সরকার রাশিয়া এবং চীন থেকে টিকা আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। তবে বিভিন্ন আইন-কানুন, বিধিনিষেধ মেনে কবে নাগাদ সেই টিকা দেশে আসবে – সেটা এক বড় প্রশ্ন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বে-নজীর আহমেদ বলছেন, যদি এই টিকা প্রাপ্তির বিষয়টা ৩/৪ মাস পিছিয়ে যায় তাহলে বড় একটা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়বে দেশ।

‘নিশ্চয় এর একটা প্রভাব পড়বে। তিন-চার মাসে যদি আমরা কয়েক কোটি লোককে টিকা দিতে পারতাম, বিশেষ করে শহরগুলোতে যেখানে সংক্রমণ বেশি, তাদের বেশিরভাগকে যদি টিকার আওতায় আনা যেত তাহলে আমরা সুরক্ষা পেতাম,’ বলছেন তিনি।

‘এই তিন-চার মাসের গ্যাপ, ভারতের যে ভয়ানক অবস্থা সেটার ঢেউ যদি বাংলাদেশে আসে, আবার এক ডোজ পেল দ্বিতীয় ডোজ পাচ্ছে না তারা খুবই হতাশ হবেন, মনোক্ষুণ্ণ হবেন। আবার নিবন্ধন করেছিলেন তারা না পেলে তারা হতাশ হবেন, সব মিলিয়ে আমরা একটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে যাচ্ছি।’

স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৮ হাজারের ৪০০ মানুষ। তাদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২৩ লাখ ২৬ হাজার ৮৬৬ জন।

রোববার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত মোট নিবন্ধন করেছেন ৭২ লাখ ২৪ হাজার ৩০৭ জন।

সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877